কুমিল্লার চান্দিনায় সুদের টাকা আদায়ের জেরে আলী আকবর (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তাকে জনসম্মুখে এভাবে বেঁধে রাখা হয়। ঘটনাটি ঘটে চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মধ্যেপাড়ায়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে বোরহান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সুদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।ভুক্তভোগী আলী আকবর রসুলপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির মৃত আজগর মিয়ার মেয়ের জামাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলী আকবর তার ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে প্রায় দুই বছর আগে বোরহানের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা সুদে নেন। নির্ধারিত সময়ে সুদের পরিশোধ করতে না পারায় বোরহান তাকে রাস্তার পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে। এ সময় ওই বৃদ্ধের হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে নির্যাতনের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে।
আলী আকবরের বড় ছেলে ইব্রাহীম জানান, আমার ছোট ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য বাবাকে ৭০ হাজার টাকা নিতে হয়েছিল। এখন সুদের নামে বোরহান এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করছে। শুধু টাকার জন্য বাবাকে রাস্তায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এভাবে অপমান করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত বোরহান সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আলী আকবর ছয় মাসের কথা বলে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। দুই বছর পার হলেও টাকা ফেরত দেননি। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বলেও কোনো সমাধান হয়নি। তাই পাওনা টাকা আদায়ের জন্য তাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখি। তবে সুদে অতিরিক্ত টাকা দাবি করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি তার কাছে সুদে টাকা দেইনি। এক লাখ ৫০ হাজার টাকার কোনো দাবিও করিনি।
এ বিষয়ে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :