ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫

ভোরের আলোয় পাহাড়ি নারীদের অন্যরকম পরিশ্রমী জীবন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৪৬ দুপুর

ভোরের প্রথম আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তাদের পথচলা। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পেরিয়ে কেউ মাথায়, কেউ কাঁধে বা হাতে নিয়ে আসেন বাঁশের ঝুড়ি ভরা দেশীয় ফলমূল আর তাজা শাকসবজি। জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিনই হেঁটে আসেন কাঁটাভরা পথ। একসময় এই পাহাড়ের পথ ছিল অনিরাপদ। চাঁদাবাজির আতঙ্ক ও অস্থিরতার কারণে হাটে আসা যেত না নির্ভয়ে।এখন সেই অন্ধকার পেছনে ফেলে পাহাড়ি নারীরা  নিশ্চিন্তে পা বাড়ান সাপ্তাহিক হাটের দিকে—যেখানে তাদের তাজা শাকসবজি বাজারে উঠতেই ছুটে আসেন ক্রেতারা।

পাহাড়ি পণ্যে জমজমাট বাজার

শনিবার সকাল মাটিরাঙ্গার সাপ্তাহিক হাটে সারি সারি বসে আছেন পাহাড়ি নারীরা। কারও সামনে বুনো শাক, লাউ, চালকুমড়া, ঝিঙে, ঢেঁড়স, বন আলু, বাঁশ কোঁড়ল, কচুপাতা, কলমি শাক, পাহাড়ি শসা, পুদিনা, কচুর লতি, আদা, হলুদ—আবার কারও ঝুড়িতে ব্যাঙ, শামুক, ঝিনুক। বেশির ভাগই আসে নিজেদের জুমচাষের ক্ষেত বা আশপাশের বন থেকে।

ক্রেতা পেতেই বিক্রি শুরু। বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয় না; ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বেশির ভাগ পণ্য বিক্রি শেষ। স্থানীয়দের কথায়—পাহাড়িরা না এলে বাজার জমে না। শিউলি ত্রিপুরা নামে এক পাহাড়ি নারী বলেন, বাজারে আসা মাত্রই ক্রেতা আসে। ঘণ্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন বলেন,পাহাড়ি নারীদের সবজি সবসময় তাজা। বাজারে তাদের উপস্থিতি ছাড়া হাটের প্রাণ হয় না। তাই সবাই এগুলো কিনে নেন।’

পাহাড় পেরিয়ে শহরেও

শুধু স্থানীয় ক্রেতাই নয়, শহরের ব্যবসায়ীরাও পাহাড়ি পণ্য কিনে নিয়ে যান চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ দেশের বড় শহরে। শহরের বাজারগুলোতে পাহাড়ি পণ্যের জন্য আলাদা দোকানও খোলা আছে। মূলত শহরে বসবাসরত পাহাড়িদের জন্য এসব পণ্য আনা হলেও, পাহাড়ি খাবারের স্বাদে আগ্রহী বাঙালি ক্রেতারাও সেখানে ভিড় জমান।

শহর থেকে আসা  ব্যবসায়ী হারুন বলেন, ‘পাহাড়ি নারীদের তাজা সবজি ও বনজ পণ্য শহরের বাজারে খুবই চাহিদা। আমরা সরাসরি পাহাড় থেকে কিনে শহরের দোকানগুলোতে বিক্রি করি। পাহাড়িরাও ভালো দাম পান।

Link copied!