ভারতের জম্মু-কাশ্মীর থেকে নারী ও শিশুসহ ২১ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দিবাগত গভীর রাতে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্তের ১১১৬ নম্বর মেইন পিলার এলাকা দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের (৩৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, পাঁচজন নারী এবং ১১ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু রয়েছে।
আটককৃতরা হলো:- সাব্বির (৪০), শামসুল আলম (৪৩), রোমানা বেগম (২৪), তোহা (৯), নুরতাজোল (৪), রিয়াজ (৪), আরমান (১), রবি খানম (২৪), হাসিনা বেগম (২২), শাহিনা আক্তার (৩), শুকতারা (৪ মাস), সেতারা বেগম (৩৫), বোরহান (৮), হাতেমা বেগম (৪০), নুরুল আবসার (১৭), জিন্নাতারা (১৫), নুরুল ইসলাম (১৩), সিরাজ (১১), আজিজুল ওসমান (৯), আয়েশা বিবি (৬) এবং একজন বোবা নারী, যার পরিচয় জানা যায়নি।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আটককৃতরা মূলত ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে প্রবেশ করে এবং হোটেল ও বাসাবাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকে।
প্রায় এক মাস আগে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা রোহিঙ্গা বলে পরিচয় দিলে ভারতীয় পুলিশ তাদের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাদের নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে দেয়।
পুশইনের খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল দ্রুত অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে আটক করে। পরে তাদের স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপত্তার সঙ্গে রাখা হয়। বিজিবি জানিয়েছে, আটককৃতরা ছয়টি পরিবারের সদস্য এবং তাদের বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই ও পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ জুলাই একই উপজেলার পানিহাতা সীমান্ত দিয়েও বিএসএফ ১০ জন নারী ও শিশুকে পুশইন করেছিল। সীমান্তে এই ধরনের পুশইন কার্যক্রম সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :