ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

শহিদ মুগ্ধর স্মরণে নববর্ষের শোভাযাত্রার মোটিফে থাকতে পারে পানির বোতল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫৭ রাত

বিগত বছরগুলোর মতো এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে বের হবে “শোভাযাত্রা”। প্রায় তিন যুগ ধরে এটি “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নামে চলে আসছে। তবে এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে।

তবে শোভযাত্রার নামে “মঙ্গল” শব্দটি থাকছে কি-না তা আগামী বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জানা যাবে।বরাবরের মতো এ বছরও নববর্ষের শোভাযাত্রার মূল আয়োজন করবে ঢাবির চারুকলা অনুষদ। নাম নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও চারুকলায় পুরোদমে চলছে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি।

এবারের নববর্ষ উদ্‌যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান”।সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার শোভাযাত্রা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। এতে দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তারা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপাদানগুলো নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেবে।

এদিকে, শোভাযাত্রার মোটিফের মধ্যে স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি, বড় আকৃতির একটি ইলিশ মাছ, সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পীদের কাঠের বাঘ আর শান্তির পায়রার নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন চট বা কাপড় বসিয়ে তাতে রং লাগিয়ে চূড়ান্ত করা বাকি।

ফ্যাসিস্টের দৈত্যাকৃতির প্রতিকৃতির উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। ইলিশ মাছ, বাংলার বাঘ ও পায়রার উচ্চতা হবে ১৬ ফুট। এই চারটি মোটিফের পাশাপাশি মীর মুগ্ধের স্মৃতি স্মরণ করে একটি পানির বোতলও তৈরি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

তবে কোন মোটিফ শেষ পর্যন্ত থাকবে কিংবা কোন মোটিফ কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন চারুকলার ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা পাঁচ থেকে ছয়টি মোটিফ করার কাজ করছি। সবকিছু চূড়ান্ত করেই আনুষ্ঠানিকভাবে বলব।”

এছাড়াও শোভাযাত্রায় ফুল,পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক থাকবে বলে জানা গেছে। এর আগে, এবারের শোভাযাত্রায় জুলাই আন্দোলনে শহিদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ানোর আদলে একটি মোটিফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে আয়োজন সংশ্লিষ্টরা। 

এদিকে, রীতি অনুযায়ী এ বছর শোভাযাত্রার আয়োজনের দায়িত্ব থাকার কথা চিল চারুকলার ২৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। তবে এক বিবৃতির মাধ্যমে তার শোভাযাত্রার আয়োজন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। ২৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনোরকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধুমাত্র শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা তাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

উল্লেখ্য, ঢাবির চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে এটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।

Link copied!