সফলতাকে আমরা প্রায়ই ট্রফি, শিরোনাম কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাপশনের মাধ্যমে উদযাপন করি। অথচ এর পেছনে লুকিয়ে থাকে বছরের পর বছর পরিশ্রম, ধৈর্য আর নীরব সংগ্রামের গল্প। ইনফিনিক্স, তরুণদের জনপ্রিয় টেক ব্র্যান্ড, তাদের নতুন নোট ৫০ সিরিজের বিজ্ঞাপনে সেই অদেখা যাত্রার গল্পকেই সামনে এনেছে—যেখানে সফলতার পাশাপাশি উঠে এসেছে সংগ্রাম আর হার না মানা ইচ্ছাশক্তির প্রতিচ্ছবি।
নির্মাতা তানভীর মাহমুদ দীপের পরিচালনায় নির্মিত এই বিজ্ঞাপনে উঠে এসেছেন তিনজন অনুপ্রেরণাদায়ক বাংলাদেশি—বক্সার সুরা কৃষ্ণ চাকমা, ফটোসাংবাদিক কেএম আসাদ এবং নারী রেসার কাশফিয়া আফরা। তারা প্রত্যেকেই সহজ পথের বদলে বেছে নিয়েছেন কঠিন পথ, স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা ছেড়ে এগিয়ে গেছেন দৃঢ় সংকল্পে।
রাঙামাটির পাহাড়ি এলাকা থেকে উঠে আসা বক্সার সুরা কৃষ্ণ চাকমা রিংয়ে পা রাখার বহু আগে থেকেই সংগ্রাম করে আসছেন। সীমিত সুযোগ আর অবহেলার মাঝেও একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা আর দৃঢ় ইচ্ছাশক্তির জোরে তিনি জাতীয় পর্যায়ে নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার গল্প ফুটিয়ে তুলেছে বিজ্ঞাপনের মূল থিম ‘পারফরম্যান্স’, যেখানে সত্যিকারের লড়াইগুলো প্রায়শই অদৃশ্য থেকে যায়।
অন্যদিকে, ফটোসাংবাদিক কেএম আসাদ তার ক্যামেরার লেন্সে বন্দি করেছেন শরণার্থী সংকট থেকে শুরু করে জলবায়ু বিপর্যয় পর্যন্ত নানা বাস্তবতা। তার গল্প আমাদের শেখায়—গভীরভাবে দেখা শুধু দক্ষতা নয়, দায়িত্বও। ধৈর্য আর সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে মনোযোগ শুধু আমাদের দেখার পদ্ধতিই নয়, কাজের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে দিতে পারে।
তৃতীয় চরিত্র কাশফিয়া আফরা, দেশের প্রথম নারী রেসার। যেখানে নারীদের রেসিং দুনিয়ায় প্রবেশের সুযোগ খুবই সীমিত, সেখানে কাশফিয়া নিজের গাড়ি নিজেই তৈরি করেছেন—আক্ষরিক ও প্রতীকী উভয় অর্থেই। তার গল্প মনে করিয়ে দেয়, সৌন্দর্যের পিছনে প্রায়ই থাকে কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ়তা।
এই বিজ্ঞাপন কেবল নান্দনিক নির্মাণ বা আবেগঘন গল্প বলার জন্য নয়, বরং সংগ্রামকে বাস্তবভাবে তুলে ধরার জন্যও প্রশংসিত হয়েছে। এখানে নেই কোনো অতিরঞ্জিত অনুপ্রেরণা—বরং প্রতিটি বাধা ও সংগ্রামের রূঢ় বাস্তবতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
নোট ৫০ সিরিজ বিজ্ঞাপনে পণ্যের প্রচার নয়, বরং সূক্ষ্মভাবে গল্পের সঙ্গে মিশে গেছে ইনফিনিক্স। তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা আর সত্যিকারের গল্পকেই সামনে এনেছে—যারা বাহবা নয়, বরং বাস্তবতাকে মূল্য দেয়।
এই গল্প কেবল একটি ফোনের নয়, বরং তাদের—যারা নীরবে এগিয়ে চলে, প্রতিটি ছোট সিদ্ধান্তে গড়ে তোলে নিজের ভবিষ্যৎ। চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে যখন আলো নিভে আসে, তখনও থেকে যায় এক স্পন্দন—মনে করিয়ে দেয়, প্রতিটি বড় যাত্রার শুরু হয় ছোট্ট একটুকরো সাহসিকতা দিয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :