ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:৪০ রাত

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ২০২৩ সালের নির্বাচনে ‘ভোট জালিয়াতির’ অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে বিজয়ী ও মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এই মামলা দায়ের করেন মুফতি ফয়জুল করীম নিজেই। মামলায় বিজয়ী প্রার্থী নৌকার আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ ছয়জন মেয়র প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরীয়াতুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রকৃত বিজয়ী ফয়জুল করীমকে পরাজিত ঘোষণা করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তাকে প্রতিহত করা হয়েছে এবং হামলার শিকার করা হয়েছে।"

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছে এসব বিষয়ে প্রতিকার চাওয়া হলেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। এমনকি তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ব্যঙ্গ করে বলেন, 'তিনি তো ইন্তেকাল করেন নাই!'—যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপমানজনক।"

কে এম শরীয়াতুল্লাহ বলেন, "বর্তমানে প্রশাসন দিয়ে বরিশাল সিটি পরিচালিত হচ্ছে। এতে নগরবাসী পর্যাপ্ত নাগরিক সেবা পাচ্ছেন না। আমরা চাই আদালত এই নির্বাচন বাতিল করে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি ফয়জুল করীমকে বিজয়ী ঘোষণা করুক।”

মামলায় আরও যেসব প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়েছে তারা হলেন—গোলাপ ফুল প্রতীকের মিজানুর রহমান বাচ্চু, হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন হাওলাদার, হাতি প্রতীকের আসাদুজ্জামান, লাঙল প্রতীকের ইকবাল হোসেন তাপস এবং টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কামরুল আহসান রুপন।

মামলার আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির জানিয়েছেন, আদালত প্রাথমিকভাবে মামলার বক্তব্য শুনেছেন এবং পরবর্তী শুনানিতে এ বিষয়ে আদালত পর্যবেক্ষণ জানাবেন।

২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা প্রতীক) পান ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুফতি ফয়জুল করীম (হাতপাখা প্রতীক) পান ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট।

ভোটগ্রহণের দিনেই হাতপাখার প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। নির্বাচন কমিশনের ‘অবহেলাপূর্ণ ও কটাক্ষমূলক’ মন্তব্য ঘিরেও ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয় এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি ওঠে।

পরবর্তীতে ফয়জুল করীমের কাছে ক্ষমা চান তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরাবরই এ নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

Link copied!