শ্রীহীন হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা।

সমুদ্রে বিলীন হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ও দর্শনীয় স্থান গুলো

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:৫৫ রাত

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সাগরে জোয়ারের প্রবল ঢেউ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকত চরম হুমকির মুখে পড়েছে। সমুদ্রের করাল গ্রাসে ক্রমশই যেন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বালু ক্ষয়ের কারনে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সব দর্শনীয় স্থান। একই সাথে শ্রীহীন হয়ে পড়েছে সৈকত। প্রতি বছরই এর প্রশস্ততা কমে যাচ্ছে। সৈকতের ভাঙন একটি গুরুতর সমস্যা, যা পর্যটন এবং পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই সৌন্দর্য হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে পর্যটকদের আকর্ষণও কমে যাচ্ছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে ভাঙন ঠেকাতে গ্রোয়েন বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পর্যটক ব্যবসায়িসহ স্থানীয়রা।

জানা গেছে, সম্প্রতি নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ দীর্ঘ সময় ধরে তান্ডব চালায়। এতে সৈকত লাগোয়া নির্মানাধীন সড়কটি বিধস্ত হয়ে যায়। জিড়ো পয়েন্ট’র দুইদিকেই এখন শুধু ধ্বংসের ছাপ পড়ে আছে। কংক্রিটের ভগ্নাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সৈকত লাগোয়া দোকানিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পুলিশ বক্স, ট্যুরিজম পার্ক মসজিদ, মন্দিরসহ ছোট বড় একাধিক স্থাপনা।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রায় ২০ বছর আগেও সৈকতের প্রস্থ ছিল ৫ কিলোমিটার। মূল বেড়িবাঁধের পর বিশাল এলাকাজুড়ে ছিল নারিকেল বাগান, তাল বাগন, শাল বন, ঝাউবন ও জাতীয় উদ্যানসহ বহু স্থাপনা। কিন্তু বার বার প্রকৃতির বৈরি আচারনে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের তান্ডবে প্রতিনিয়ত বালু ক্ষয়ে এসব বাগান বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বেড়িবাঁধের খুব কাছাকাছি সৈকত চলে এসেছে।

মুলত: ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর থেকেই কুয়াকাটার সৈকতে বালুক্ষয় প্রকটভাবে দেখা দেয়। এরপর আইলা, মহাসেন, কোমেন, রোয়ানু, মোরা, ফণী, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাব ছাড়াও দফায় দফায় অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমা সহ জলবায়ু পরিবর্তন জনিতকারনে সমুদ্রের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় সৈকতের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বর্তমানে সাগরে পানির চাপ বাড়ছে, যার ফলে বালু ক্ষয়ে সৈকত সংকুচিত হচ্ছে। জোয়ারের সময় সৈকতে পর্যটকদের হাটার পথ থাকেনা। ইতিমধ্যে সাগরে নিন্মচাপের প্রভাবে অস্বাভাকিব জোয়ারের ঢেউয়ের তাÐবে প্রায় ৫ কোটি টাকায় নির্মাণাধীন সড়ক ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কাজও শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মী মো.জনি আলমগীর বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ভাঙন একটি গুরুত্বর সমস্যা যা পর্যটন এবং পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ভাঙনের কারণে কুয়াকাটার সৌন্দর্য হ্রাস পাচ্ছে এবং পর্যটকদের আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকাকেও হুমকির মুখে ফেলছে। বর্তমানে সীবিচটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। স্থায়ী প্রটেকশন না দিলে বড় ধরনের সর্বনাশ হবে সৈকতের। তাই এই সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষকে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.শাহ আলম জানান, জরুরি প্রটেকশনের জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে এরই মধ্যে ডকুমেন্ট অফ প্রজেক্ট প্রফরমা মান্ত্রনালয় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে স্থায়ীভাবে সৈকত সুরক্ষার কাজ করা হবে।

Link copied!